পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে রাজশাহীর সুনাম রয়েছে। দূষণ কমানোয় এরই মধ্যে বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেয়েছে এই মহানগরী।

শিক্ষানগরী হিসেবেও রয়েছে আলাদা পরিচিতি। কিন্তু এসব স্বীকৃতি-পরিচিতি ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছে দখলের থাবায়। বিখ্যাত সেই পদ্মার পাড় থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনের জায়গা, রেলের জমি, সড়ক ও দখলে বিক্ষত রাজশাহীজনপথ (সওজ) বিভাগের জমি, সরকারি জলাশয়, খাল, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জায়গা সবখানে থাবা বসিয়েছে দখলদাররা। যে যার মতো করে দখলের জায়গায় রাতারাতি গড়ে তুলছে পাকা বা আধাপাকা স্থাপনা। তার মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ি। সরকারি জায়গা দখল করে বসে জুয়ার আসরও। কোথাও কোথাও হাঁটার জায়গাটুকুও দখল হয়ে গেছে। দখলদারের তালিকায় রয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও প্রভাবশালী গোষ্ঠী। সরকারি এক সংস্থার জমি দখল করছে আরেক সংস্থা। সবই হচ্ছে নাকের ডগায়। কিন্তু অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এতে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে দখলদাররা। দখলে সংকুচিত পদ্মার তীর : সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর তালাইমারী থেকে শুরু করে একেবারে বুলনপুর পর্যন্ত পদ্মার উত্তর তীরের বিভিন্ন স্থান দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে শত শত অবৈধ স্থাপনা। কোথাও কোথাও নদীর ভেতরের জায়গায়ও স্থাপনা বানানো হয়েছে। এসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে বাড়িঘর, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়, ক্লাবঘর, ফাস্ট ফুড ও কফি হাউসের দোকান, গরুর খামার, পার্কসহ নানা কিছু। কোথাও স্থানীয় প্রভাবশালীরা, কোথাও সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, কোথাও খোদ সিটি করপোরেশন, এমনকি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও নদীর তীর দখল করে এসব স্থাপনা গড়ে তুলেছে। ফলে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে পদ্মাকে ঘিরে গড়ে ওঠা রাজশাহী শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। নদীর তীরে এসে নিরাশ হচ্ছে মানুষ। নদীতীরের শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনাও গিয়ে পড়ছে পদ্মায়। এতেও বিনিষ্ট হচ্ছে পদ্মার স্বাভাবিক পরিবেশ।



১. রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী মোড়ে শহীদ মিনারের পেছনের জায়গা দখল করে তৈরি হয়েছে ‘ওয়াই এম’ নামের একটি স্পোর্টিং ক্লাব।


২. মহানগরীর পদ্মার পাড় ঘেঁষে বড় কুঠি থেকে মুন্নুজান মুক্ত মঞ্চের আগ পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধ দখল করে তৈরি করা হয়েছে ফাস্ট ফুডের দোকান।


৩. কাটাখালী পৌর এলাকার পশ্চিম শ্যামপুরে নদীর সঙ্গে সংযোগকৃত একটি খালের মাঝখানে গড়ে তোলা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কার্যালয়।


৪. শহর রক্ষা বাঁধের দক্ষিণ দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন জমি দখল করে তৈরি করা হয়েছে রেস্টুরেন্ট ও সম্মেলনকেন্দ্র। তবে কারাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি তাদের নিজস্ব জমি।