বাংলা নিউজ ডেস্ক:বিএনপি অংশগ্রহন ছাড়া নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এখন ক্ষমতায় আছেন কিছুদিনের জন্য। খুব আনন্দিত হচ্ছেন, বগল বাজাচ্ছেন যে আমরা তো ক্ষমতায় এসে যাবো। কোনো চিন্তা নেই, বিএনপি না এলে না আসবে। বিএনপি না আসলে হবে না। আর গিলাতে পারবেন না। এদেশের মানুষকে আর ওই ধরণের নির্বাচন গিলাতে পারবেন না।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষ অবশ্যই আগামী নির্বাচনে সমস্ত দলগুলোকে নির্বাচনে দেখতে চায়, এ দেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে একটা সত্যিকার অর্থেই সুন্দর পরিবেশ-পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যেতে চায়, এদেশের মানুষ তারা নিজেরা নিজের ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তন করতে চায়, সরকার গঠন করতে চায়।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীতে সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ভাসানী স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪১তম মৃত্যুদিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন।
সরকারের উদ্দেশ মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষের কাছে যান, তাদের হৃদয়ের ভাষাটা বুঝুন, চোখের ভাষাটা বুঝুন, দেয়ালের লিখনটা পড়ুন, দেখুন তারা কি বলেছে। তারা সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন চায়, জনগনের সরকার চায়।সেই পরিবর্তন সম্ভব যদি একটা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়।
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে ‘কিংবদন্তীর নেতা’ হিসেবে অভিহিত তার মৃত্যু দিবসের সংবাদ জাতীয় দৈনিকসহ গণমাধ্যমে ‘ছোট করে প্রকাশে’ বেদনার ও ক্ষোভের কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
ভাসানী স্মৃতি সংসদের সভাপতি জিয়াউল হক মিলু‘র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাবেক মন্ত্রীজাকারিয়া খান চৌধুরী, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, সাবেক মন্ত্রী নুর মোহাম্মদ খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট নজমুল হক নান্নু, মেহেদি আহমেদ রুমী, মরহুম নেতা মসিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে ন্যান্সি রহমার, স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুল হুদা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তোষামোদি নয়, নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ দেখতে চায় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা নির্বাচন কমিশন বানিয়েছেন আপনাদের ইচ্ছামতো লোক দেখানো কিছু ক্যারিকেচার করে এটা করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, তিনি তোষামদি করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন আনতে চান। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, আপনি নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নিন, নিরপেক্ষভাবে কাজ করুন। কাউকে তোষামোদি করার তো দরকার নেই। এটার প্রয়োজন নেই।
রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নির্বাচন কমিশনে শেষ হওয়া সংলাপের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বিএনপি বলেছেন, খুব খুশি করার চেষ্টা করছেন। আবার বলছেন যে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ মানুষ দিয়ে আওয়ামী লীগের কথা বলছেন। এসব কথা বললে লাভ হবে না। কাজে দেখান। কাজের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে আপনারা নিরপেক্ষ প্রমাণ করুন।
সব রাজনৈতিক দলগুলোর সমান সুযোগ সৃষ্টির দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন থেকে সব কিছু আওয়ামী লীগ সরকার করে যাবে। তারা মহাসুখে হেলিকপ্টারে চড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন। আর আমরা একটা মিটিংও করতে পারব না, রাস্তায় দাঁড়াতেও পারব না, একটা সত্য কথা বলতেও পারব না, আমরা কোর্টের বারান্দায় ঘুরব, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাপ্তাহে সাপ্তাহে হাজিরা দিতে হবে, আমাদের সব নেতা-কর্মীদের হাজিরা দিতে হবে- এভাবে নির্বাচন হবে না। লেভেল ফিল্ড এখন থেকেই সব রাজনৈতিক দলকে তাদের কাজ করতে দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন হতে হলে অবশ্যই লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, সমস্ত রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং এই সংসদকে ভেঙে দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি ফলপ্রসু ও একটা কার্য্করী নির্বাচন দিতে হবে।